দৃশ্যম ২ মুভি রিভিউ – Drishyam 2

দৃশ্যম ২ মুভির রিভিউ পড়ার আগে। দ্রিশ্যম ২ মুভি মালায়ালাম মুভির অভিনেতা, অভিনত্রী, নির্মাতাসহ সকল কলাকুশলী ও মুক্তি সম্পর্কিত সকল তথ্য নিচের প্রদত্ত লিংক থেকে জেনে আসুন।

দৃশ্যম ২ মুভি

দৃশ্যম ২সিনেমা সম্পর্কিত তথ্যাদি জানা থাকলে আমাদের রিভিও পড়ে মজা পাবেন এবং আপনি আপনার মতামত আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারবেন। আর হ্যা আপনি চাইলে আপনার প্রিয় মুভি বা তারকার সম্পর্কে আপনার মতামত বা রিভিউ লিখে আমাদের পাঠাতে পারেন। তো কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক……

দৃশ্যম ২মুভি রিভিউঃ মোহনলালের উপস্থিতি ছাড়া মুভিটি শূন্য

  • পার্সোনাল রেটিংঃ ৬.৫/১০
  • রিভিউকারীঃ আরিয়ান

রিসেন্ট মুভি লাভারদের প্রিয় একটি মুভির নাম দৃশ্যম ২। যেটি নিয়ে অনেক আলোচনা হয়েছে, এমনকি ইতিপূর্বে অনেকেই মুভিটির রিভিও লিখেছেন এবং অনেক সুন্দর সুন্দর কথা বলেছেন। আমিও আমার জায়গা থাকে আমার মতামত শেয়ার করতে চলে এসেছি আমার প্রিয় প্লাটফর্ম একটি বাংলাদেশে। আর আমি আগেই বলেছি আমি একটু ব্যতিক্রমভাবে অর্থাৎ আমার নিজের মতো করে কয়েকটি পয়েন্ট উল্লেখপূর্বক রিভিউ লিখি, এবারও ব্যতিক্রম নয়। আশা করি সবার ভালো লাগবে। সেই সাথে আমি নিয়মিত লেটেস্ট মুভি, টিভি সিরিজ, ওয়েব সিরিজ নিয়ে লেখার চেষ্টা করছি। প্রতিদিন না পারলেও ছুটির দিন গুলি কাজে লাগানোর চেষ্টা করছি। আর কথা না বাড়িয়ে চলুন শুরু করা যাক…

টাইটেল

প্রথমেই বলে নেই মুভির টাইটেল সম্পর্কে। মুভির টাইটেল দৃশ্যম ২ঃ দ্যা রেপুটেশন, দৃশ্যম শব্দের এক্সার্ট মিনিং কি জানি না তবে আমার কাছে মনে হয় ভিজুয়াল বা যা দেখা যায় এমন কিছু বুঝাইছে। জর্জকুট্টির পরিবারের সম্মান ও পরিবারের উপর আসা বিপদ মোকাবেলার গল্প এই মুভিতে দেখতে মিলেছে। যাই হোক গল্প নিয়ে পড়ে জানা যাবে। আমার কাছে মনে হইছে, মুভিটির গল্প অনুযায়ী টাইটেল একদম পার্ফেক্ট ছিলো।

কাস্টিং, রোল ও অভিনয়

এবার আশা যাক কাস্টিং, রোল ও অভিনয়ের দিকে। এই অংশে মূল চরিত্রের কিছু তারকাদের সম্পর্কে আলাদা আলাদা ভাবে জানা যাক।

মোহনলালঃ মুভিতে জর্জকুট্টির চরিত্রে দেখতে পেয়েছি মোহনলালকে, যে চরিত্র ছিলো সিনেমার মূল আকর্ষণ। যিনি বরাবরেই মতোই অস্থির পার্ফমেন্সের মাধ্যমে আমাদের মন জয় করে নিয়েছেন। মালায়ালাম ইন্ডাস্টিসহ প্যান ইন্ডিয়ার সেরা অভিনেতার তালিকার শীর্ষের দিকেই রয়েছে এই অভিনেতার নাম। যাকে যে কোন চরিত্রে দেখতেই ভালো লাগে। যে কোন চরিত্রকে খুব সহজেই আপন করে নিতে পারেন এই অভিনেতা। সিনেমাটি দেখা বা জনপ্রিয়তার পেছনে একটি কারণ মোহনলাল ও বলতে পারি।

মিনাঃ মুভিতে জর্জকুট্টির স্ত্রী ও বোকা সোকা, নির্বোধ রানি জর্জকুট্টির চরিত্রে মিনাকে দেখতে পেয়েছি। যদি একটু বেশী মেকাপ মারেন আর ঘুমানোর আগের মূহুর্তের সিনেও তাকে সেই সাজুগুজু করে থাকতে দেখতে পাই, বিষয়টা কেন জানি আমার কাছে ভালো লাগে না। ন্যাচারাল বিষয়টায় অন্য রকমের একটা স্বাদ থাকে। আমার মনে হয় ভিক্ষুক বা গরিব চরিত্রেও তাকে আমরা সেজেই দেখতে পারবো। নায়িকা বলে কথা, তাই সব সময় ফিটফাট থাকা লাগবে। আমার কাছে শ্রেয়া সরণ অথবা সামান্তা এমন চরিত্রের জন্য বেষ্ট লাগে।

আনসিবা হাসানঃ মুভিতে জর্জকুট্টির বড় মেয়ে আঞ্জু জর্জকুট্টির ভূমিকায় দেখতে পেয়েছি আনসিবা হাসানকে। তার অভিনয় নিয়ে এক্সার্টলি কিছু বলতে পারছি না। কারণ, আগের পার্টের ইন্সিডেন্টের পর আঞ্জু জর্জকুট্টির চরিত্র এমন চুপচাপ, ভীতু প্রকৃতির হবার কথা ছিল। যা তিনি ভালোভাবে করেছেন।

 

এস্থার অনিলঃ মুভিতে জর্জকুট্টির ছোট মেয়ে আনমোল “আনু” জর্জকুট্টির ভূমিকায় এস্থার অনিল। মুভির মাঝে কিছু কিছু জায়গায় মনে হচ্ছিল গল্পে আনু কেন্দ্রিক কিছু একটা টুইস্ট আসবে, তার দিকে ফোকাস করে গল্পে আগাচ্ছিলো, কিন্তু পরবর্তীতে তার চরিত্র আর চোখেই পড়ে নাই। কিছু কিছু জায়গায় তারে ওভার এক্টিং করতে দেখেছি। দৃশ্যমে প্রশংসনীয় অভিনয় করেছিলেন। কিন্তু দৃশ্যম ২ তে আমার তেমন ভালো লাগে নাই।

আশা সরথঃ নিহত বরুণের মা ও প্রাক্তন ইনস্পেকটর জেনারেল অব পুলিশ গীতা প্রভাকরের চরিত্রে আশা সরথকে দেখতে পেয়েছি। কিন্তু তার চরিত্র অনেক দূর্বল ছিলো। এই মুভিতে কোন নেগেটিভ রোল তেমন স্ট্রং ছিলো না। তবে গল্পের চাহিদা অনুযায়ী ভালো অভিনয় করেছে।

সত্য কথা বলতে মোহনলালের জর্জকুট্টি চরিত্র ব্যতিত কোন চরিত্রই মনে দাগ কাটতে পারে নাই। যদিও এই ক্ষেত্রে তারকাদের দোষ নাই, গল্পই এমন ছিলো।

মেকিং

মেকিং এর কথা বলতে গেলে প্রথমেই আমার মনে আসে মুভির বিজিএম এর কথা, সিনেমাতে অস্থির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছিলো। কথায় আছে, বি জি এম সিনেমার প্রাণ, মুভিটির বিজিএম আমার অনেক পছন্দনীয় ছিল। এছাড়া মুভির গানগুলিও অনেক সুন্দর ছিলো।

মুভিটির ভিজুয়াল মেকিং এর ব্যাপারে বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় জীঠু জোসেফ এর কথা। ইতিমধ্যেই তিনি তামিল, তেলুগু ও হিন্দি মুভি ইন্ডাস্টি তার অবস্থান করে নিয়েছেন। বিশেষ করে দৃশ্যম মুভি তার ক্যারিয়ার চেঞ্জিং মুভি, তিনি মুভিটি তামিল ও তেলেগুতে অফিশিয়াল রিমেক করেছেন। তার লেখা গল্প ও ডিরেকশনে ভিন্নতার স্বাদ পাওয়া যায়। ভালো লাগে বিষয়গুলি। এই মুভির মেকিং অনেক ভালো ছিলো বিশেষ করে এতো বছর পর বানানো সেট গুলিতে কোন পরিবর্তন পাই নাই, দেখে মনে হচ্ছিল একদম সেইম টু সেইম। মেকিং এ অনেক বেশী মনোযোগী ছিলেন কিন্তু গল্প মাঝে মাঝে টানটান উত্তেজনা বিষয়টা ধরে রাখতে পারে নাই।

প্লট

এবার সিনেমার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে কথা বলছি যেটা হলো সিনেমার গল্প। এই সিনেমার পূর্ববর্তী গল্পে যেমন ভাইভ ক্রিয়েট করেছিলো এটায় সেই তুলনায় অনেক কম ছিলো। আমার গল্প নিয়ে অনেক বেশী এক্সপেক্টেশন ছিলো, কিন্তু নিরাশ করে দিছে। জর্জকুট্টির স্ত্রী তার প্রতিবেশী বান্ধবীর সারিতার কাছে বোকামি করবে এটা আগে থেকেই বোঝা যাচ্ছিলো। আর গল্পে আনমোল “আনু” জর্জকুট্টির দিকে বেশী ফুল ফোকাস করে আবার দিফোকাসে ফেলে দিলো, বুঝলাম না বিষয়টা কি ছিলো। গল্প কি পরবর্তি সিকুয়ালের হিন্টস দিলো নাকি তাও বুঝলাম না। আর গল্পে নেগেটিভ চরিত্র গুলি ফুস মার্কা ছিলো। তেমন স্ট্রং কিছু দেখতে পাই নাই। আগের গল্প ও মোহনলাল বা জর্জকুট্টির উপস্থিতি ছাড়া মুভিটি শূন্য লেগেছে। তবে ক্লাইমেক্স ভালো ছিলো।

ওভারঅল

সর্বোপরি বলা যায়, মোহনলালের দুর্দান্ত অভিনয় দেখতে মিলেছে কিন্তু দৃশ্যম এর প্রথমটার তুলনায় এটির প্লট দূর্বল লেগেছে, দৃশ্যম একটা ফুল প্যাকেজ ছিলো। আপনি যদি না দেখে থাকেন তবে দেখে নিতে পারেন। আপনার সময় নষ্ঠ হবে এটুকু বলতে পারি। তবে যদি হাই এক্সপেক্টেশন নিয়ে দেখেন তবে তুলনামূলকভাবে নিরাশ হইতেই পারেন। তবে মোহনলালের ফ্যান হয়ে থাকলে তো ভালো লাগবেই। প্রিয় বলে কথা।

আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি আবার সময় করে অন্য কোন মুভি নিয়ে লিখবো। আপনাদের রিভিউটি ভালো খারাপ যাই লাগুক কমেন্ট করে জানাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *