শ্যাম সিংহ রায় মুভি রিভিউ

শ্যাম সিংহ রায় মুভির রিভিউ পড়ার আগে। শ্যাম সিংহ রায় তেলুগু মুভির অভিনেতা, অভিনত্রী, নির্মাতাসহ সকল কলাকুশলী ও মুক্তি সম্পর্কিত সকল তথ্য নিচের প্রদত্ত লিংক থেকে জেনে আসুন।

শ্যাম সিংহ রায় মুভি

শ্যাম সিংহ রায় সিনেমা সম্পর্কিত তথ্যাদি জানা থাকলে আমাদের রিভিও পড়ে মজা পাবেন এবং আপনি আপনার মতামত আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারবেন। আর হ্যা আপনি চাইলে আপনার প্রিয় মুভি বা তারকার সম্পর্কে আপনার মতামত বা রিভিউ লিখে আমাদের পাঠাতে পারেন। তো কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক……

শ্যাম সিংহ রায় মুভি রিভিউঃ নানীর সুপার ন্যাচারাল পার্ফমেন্স

  • পার্সোনাল রেটিংঃ ৯/১০
  • রিভিউকারীঃ আরিয়ান

প্রিয় প্লাটফর্ম একটি বাংলাদেশে নতুন আরেকটি মুভির রিভিউ নিয়ে হাজির হলাম। আর আজকেও একটু ব্যতিক্রমভাবে অর্থাৎ আমার নিজের মতো করে কয়েকটি পয়েন্ট উল্লেখপূর্বক রিভিউটি লিখতে যাচ্ছি। আশা করি সবার ভালো লাগবে।

টাইটেল

প্রথমেই বলে নেই মুভির টাইটেল সম্পর্কে। মুভির টাইটেল নানীর চরিত্রকে কেন্দ্র করে রাখা হয়েছে। মুভিটিতে নানীর চরিত্রের নাম শ্যাম সিংহ রায়। শ্যাম সিংহ রায়, যা ছিলো একদম যথার্য টাইটেল।

কাস্টিং, রোল ও অভিনয়

এবার আশা যাক কাস্টিং, রোল ও অভিনয়ের দিকে। এই অংশে মূল চরিত্রের কিছু তারকাদের সম্পর্কে আলাদা আলাদা ভাবে জানা যাক।

নানীঃ মুভির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ শ্যাম সিংহ রায় ও বাসুদেব ঘণ্টার এই দুই চরিত্রে দেখতে মিলবে আমাদের সকলের প্রিয় ন্যাচারাল স্টার নানীকে। শ্যাম সিংহ রায়ের কলকাতার সম্ভ্রান্ত পরিবারে জন্ম। যিনি অন্যায়ের প্রতিবাদে বলিয়ান। তিনি একজন বিল্পবী লেখক, যিনি তার লেখার মাধ্যমে দেবদাসীসহ বিভিন্ন সামাজিক অপদৃষ্টি তুলে ধরেন। তার লেখনী হয়ে উঠে জনপ্রিয়। শ্যাম সিংহ রায় সম্পর্কে আরও অনেক কিছু আছে বলার মতো, যা প্লট অংশে তুলে ধরবো।

অপরদিকে বাসুদেব নানির পুনর্জন্ম চরিত্র ছিলো। যে মুভি ডিরেক্টর হবার জন্য শর্ট ফিল্ম বানাচ্ছিলো। কৃতি শেঠিকে তার শর্ট ফিল্মের মডেল হিসেবে পছন্দ করে এবং অনেক তেলখড়ি পুরিড়ে তাকে রাজি করান। শর্টফিল্ম সবার পছন্দ হয় এবং প্রডিসার মুভি অফার করে। মুভি মেকিং করলে সেটি জনপ্রিয়তা পায়। মুভির প্লট নানির অপর চরিত্র শ্যাম সিংহ রায়ের লেখা সাথে মিলে যায়, যা ১৯৬৯ লেখা হয়েছিলো। তারপর সিনেমায় উঠে আসে পুনর্জন্ম এর বিভিন্ন বিষয়। শ্যাম সিংহ রায়কে কেন্দ্র করে মুভি সামনে এগিয়ে যায়।

নানীর অভিনয় ছিলো দুর্দান্ত। নানির শ্যাম সিংহ রায় ও বাসুদেব দুই চরিত্রই আমার অনেক ভালো লেগেছে।

সাই পল্লবীঃ মুভির অপর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ মৈত্রেয়ী/রোজি চরিত্রে অভিনয় করেছেন সাই পল্লবী। যিনি একজন দেবদাসী, শ্যাম সিংহ রায় যার প্রেমে পড়ে যায়। বিভিন্ন ঝামেলা পেরিয়ে শ্যাম সিংহ রায় মৈত্রেয়ী/রোজিকে দেবদাসী থেকে মুক্তি দেন এবং বিয়ে করেন। তাদের ভালোবাসার বিভিন্নদিক ছিলো হৃদয়ছুয়ানো। শ্যাম সিংহ রায় মারা যাবার পরেও তার প্রতি ভালোবাসার কোন কমতি ছিলো না রোজির। সাই পল্লবী অনেক ভালো অভিনয় করেছেন। তার নৃত্য আমার কাছে অনেক ভালো লেগেছে এবং লাগে। মৈত্রেয়ী/রোজি চরিত্র আমার অনেক ভালো লেগেছে।

কৃতি শেঠিঃ মুভির অপর প্রিয় চরিত্রের নাম কীর্তি। কীর্তি চরিত্রে অভিনয় করছেন কৃতি শেঠি। যিনি সাইকোলজি গ্র্যাজুয়েট মেয়ে। যার অভিনয়ের প্রতি কোন ইন্টারেস্ট নেই। কিন্তু বাসুদেব এর ব্ল্যাকমেইল এবং সিন্সিয়ারিটি দেখে তার শর্টফিল্মে অভিনয় করতে রাজি হন এবং সময় সাপেক্ষে বাসুদেবের প্রেমে পড়ে যান। ভালোবেসে দুজন শারীরিক মিলন করতে যাচ্ছিলো এমন সময় বাসুদেবের মুখে রোজি নাম শুনে রাগ করে ছেড়ে চলেন যান। তবে বাসুদেব যখন কপিরাইট মামলার দায়ে জেলে যান তখন কীর্তি প্রাক্তনকে বাঁচাতে হাজির হয়ে যান। এবং একে একে পুনর্জন্ম সম্পর্কিত টুইস্ট ক্লিয়ার হয়তে থাকে এবং রোজির কাহিনিও জানতে পারেন। খুবই ভালো অভিনয় করেছেন কৃতি শেঠি।

ম্যাডোনা সেবাস্টিয়ানঃ ম্যাডোনা সেবাস্টিয়ান মুভিটিতে পদ্মাবতী নামে একজন আইনজীবীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন। যিনি কীর্তির পরিচিত এবং বাসুদেবের কেস লড়েন।

যিশু সেনগুপ্তঃ – শ্যাম সিংহ রায়ের ভাই দেবেন্দ্র সিংহ রায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন ভারতীয় বাংলার জনপ্রিয় অভিনেতা যিশু সেনগুপ্ত। কলকাতার সম্ভ্রান্ত পরিবারের ছেলে হিসেবে শ্যাম সিংহ রায় কার্যকলাপ সহ্য করতে পারেন না। তিনি মনে করেন শ্যাম সিংহ রায় ধর্মীয় ভাবমুর্তি ও তার পরিবারের মান সম্মান নষ্ট করছেন। তাই শ্যাম সিংহ রায়কে বাড়িতে ডেকে এনে নিজের হাতে খুন করেন।

রাহুল রবীন্দ্রনঃ শ্যাম সিংহ রায়ের অপর ভাই মনোজ সিংহ রায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন রাহুল রবীন্দ্রন। যিনি দেবেন্দ্র সিংহ রায়ের পরিপূরক। শ্যাম সিংহ রায়কে অনেক ভালোবাসেন।

এই চরিত্রগুলির বেশী ভূমিকা ছিলো মুভিটিতে। মনে হচ্ছিলো যে যার অবস্থানে একদম পারফেক্ট ছিলো। এছাড়া মুরলী শর্মা, অভিনব গোমাতম, মণীশ ওয়াধওয়া, লীলা স্যামসন, সুভলেখা সুধাকর, অনুরাগ কুলকার্নিসহ আরও অনেকে ছিলো। তারা যে যার চরিত্রগুলি যথার্থভাবে ফুটিয়ে তুলেছে।

মেকিং

মেকিং এর কথা বলতে গেলে প্রথমেই আমার মনে আসে মুভির বিজিএম এর কথা, সিনেমাতে অস্থির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছিলো। যা মিকি জে. মেয়ার করেছেন। কথায় আছে, বি জি এম সিনেমার প্রাণ, মুভিটির বিজিএম আমার অনেক পছন্দনীয় ছিল। আর এই মুভির শ্রী ভেন্নালা গানটা আমার অনেক পছন্দের ছিলো।

মুভিটির ভিজুয়াল মেকিং এর ব্যাপারে বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় রাহুল সংকৃত্যন এর কথা। এর আগে রাহুল সংকৃত্যনের ট্যাক্সিওয়ালা মুভি দেখছিলাম, মুভিটি আমার অনেক ভালো লাগছে। মুভিতে তার কাজ গুলি দেখে অনেক ভালো লেগেছে। বিশেষ করে গল্প, গল্পের বিষয়ে একটু পড়েই বলি। মুভিটির ক্যামেরা ফ্রেমিং, ইডিটিং, কালার, স্ক্রিন প্লে সব কিছু খুবই ভালো লেগেছে।

প্লট

এবার সিনেমার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে বলি। আমার মনে হয়, সিনেমার গল্পই সিনেমার ভালো খারাপের পেছনে থাকে। একটা ভালো গল্প দিতে পারে জনপ্রিয়তা আবার একটা খারাপ গল্প নিমিষেই ডুবিয়ে দিতে পারে, যত ভালো মেকিং বা কাস্ট থাকুক না কেন। তাই গল্প নির্বাচন অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। শ্যাম সিংহ রায় মুভির গল্প অনেক স্ট্রং লেগেছে। শ্যাম সিংহ রায়, মৈত্রেয়ী/রোজি, বাসু, কীর্তি, পদ্মা, দেবেন্দ্র সিংহ রায়, মনোজ সিংহ রায় চরিত্র অনেক সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলছে। অনেকগুলি চরিত্র মনে রাখার মতো ছিলো। আর আমার কাছে এটাই প্লাস পয়েন্ট মনে হইছে। গল্পে সব সময় টান টান একটা উত্তেজনা ছিলো। এক কথায় বলতে গেলে, অসাধারণ গল্প ছিলো।

ওভারঅল

সর্বোপরি বলা যায়, অনেকদিন পর অনেক ভালো মানের একটা মুভি দেখতে পেলাম। কোথাও এক মূহুর্তের জন্য বিরক্ত লাগে নাই বা বোর করার মতো এক ঘেয়ামো কিছু ছিলো না। গুরুত্বপূর্ণ তিনটি চরিত্রই অনেক ভালো লেগেছে। এছাড়া গল্পও অনেক ভালো লেগেছে।

আমি চাই না কোন প্রকার স্পয়লায় দিয়ে আপনাদের মুভিদেখার ইন্টারেস্ট নষ্ট করতে তবে চরিত্র ডিস্ক্রাইব করতে গিয়ে কিছু কিছু লিক করছি। আর করতে চাই না। আপনিও দেখতে পারেন আশা করছি ভালো লাগবে। মুভিটিতে আমি অন্যরকম প্রেম-ভালোবাসার ছাপ দেখতে পাইছি।

আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি আবার সময় করে অন্য কোন মুভি নিয়ে লিখবো। আপনাদের রিভিউটি ভালো খারাপ যাই লাগুক কমেন্ট করে জানাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *