কেজিএফ চ্যাপ্টার টু মুভি রিভিউ

কেজিএফ চ্যাপ্টার টু মুভির রিভিউ পড়ার আগে। কেজিএফ চ্যাপ্টার টু তেলুগু মুভির অভিনেতা, অভিনত্রী, নির্মাতাসহ সকল কলাকুশলী ও মুক্তি সম্পর্কিত সকল তথ্য নিচের প্রদত্ত লিংক থেকে জেনে আসুন।

কেজিএফঃ চ্যাপ্টার টু মুভি

কেজিএফ চ্যাপ্টার টু সিনেমা সম্পর্কিত তথ্যাদি জানা থাকলে আমাদের রিভিও পড়ে মজা পাবেন এবং আপনি আপনার মতামত আমাদের সাথে শেয়ার করতে পারবেন। আর হ্যা আপনি চাইলে আপনার প্রিয় মুভি বা তারকার সম্পর্কে আপনার মতামত বা রিভিউ লিখে আমাদের পাঠাতে পারেন। তো কথা না বাড়িয়ে শুরু করা যাক……

কেজিএফ চ্যাপ্টার টু মুভি রিভিউঃ পাওয়ারফুল গল্প এবং যশের ধামাকাদার পার্ফরমেন্স

  • পার্সোনাল রেটিংঃ ১০/১০
  • রিভিউকারীঃ আরিয়ান

খুবই দ্রুত প্রিয় প্লাটফর্ম একটি বাংলাদেশে নতুন আরেকটি মুভির রিভিউ নিয়ে হাজির হলাম। আর আজকেও একটু ব্যতিক্রমভাবে অর্থাৎ আমার নিজের মতো করে কয়েকটি পয়েন্ট উল্লেখপূর্বক রিভিউটি লিখতে যাচ্ছি। আশা করি সবার ভালো লাগবে।

বাহুবলী মুভির পর ইন্টারন্যাশনাল টেস্ট সম্পন্ন প্যান ইন্ডিয়ায় ভালোমানের মুভি মেকিং ট্রেন্ড শুরু হয়েছে। ২০১৮ সালে যখন কেজিএফ চ্যাপ্টার ওয়ান মুভি মুক্তি পেয়েছিলো। তখন  অনেক জনপ্রিয়তা পেয়েছিলো সিনেমাটি, আমার মতো অনেকেই চ্যাপ্টার টুর জন্য উৎসুক হয়েছিলো। ফাইনালি ২০২২ সালের ১৪ এপ্রিল মুভি লাভারদের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে মুভিটি বিশ্বব্যপি মুক্তি পেয়েছে। বক্স অফিসের বিভিন্ন রেকর্ড এবং দর্শকের ভালোবাসায় সিক্ত কেজিএফ চ্যাপ্টার টু।

কথায় আছে, সবুরের ফল মিঠা হয়। এই সিনেমার বেলায় ফলাফল একটু বেশীই মিঠা ছিলো।

টাইটেল

কেজিএফ চ্যাপ্টার টু অর্থাৎ কোলার গোল্ড ফিল্ড মুভির দ্বিতীয় পার্ট। ভারতের কর্ণাটক রাজ্যের কোলার জেলায় অবস্থিত সোনার মাইনিং ফিল্ডকে কেন্দ্র করে রাখা হয়েছে। মুভিটির টাইটেল কেজিএফ চ্যাপ্টার টু, যা ছিলো একদম যথার্য টাইটেল।

কাস্টিং, রোল ও অভিনয়

এবার আশা যাক কাস্টিং, রোল ও অভিনয়ের দিকে। এই অংশে মূল চরিত্রের কিছু তারকাদের সম্পর্কে আলাদা আলাদা ভাবে জানা যাক।

যশঃ মুভির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ রাজা কৃষ্ণাপ্পা বেরিয়া “রকি”র চরিত্রে দেখতে মিলবে আমাদের সকলের প্রিয় রকিং স্টার যশকে। ইন্ডিয়ান আন্ডারওয়ার্ল্ড কিং, বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাশীল এবং ধনী হওয়ার তীব্র জেদ নিয়ে এগিয়ে চলা ডনের চরিত্রে অভিনয় করেছেন যশ। আমার প্রিয় ও মনোমুগদ্ধকর চরিত্র ছিলো রকি। স্টাইলিশ, অসাধারণ ডায়ালগ ও ভরপুর একশনে সাজানো ছিলো চরিত্রটি। যশের অভিনয় ছিলো প্রশংশনীয়। কেজিএফ চ্যাপ্টার ওয়ান ও টু সিনেমার কয়েকটি মূল স্তম্ভ ছিলো, মুভির প্রথম স্তম্ভ যশের এক্টিং ও ক্যারেক্টার ফরমেশন। রকির এন্ট্রি, একশন এবং স্টাইলিশ ডায়লগ ডেলিভারী, আমার অনেক ভালো লেগেছে। আমার মনে হয়, আমার মতো আরও অনেকই আছেন, যারা সিটি মারতে ভুলেন নাই। আগেও ডনের চরিত্রে অনেক অভিনেতার মুভি দেখছি কিন্তু যশের রকি চরিত্র আমার কাছে স্পেশাল। আমার কাছে কেজিএফ মুভির সেরা চরিত্র রাজা কৃষ্ণাপ্পা বেরিয়া “রকি” এবং সেরা অভিনয় করেছেন দক্ষিণী অভিনেতা যশ।

সঞ্জয় দত্তঃ মুভির কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের মধ্যে একটি হলো আধীরা, যে সূরিয়াবর্ধনের ভাই এবং কেজিএফ এফ এর উত্তরাধিকারী। আধীরার চরিত্রে দেখতে মিলবে বলিউডের জনপ্রিয় ভিলেন সঞ্জয় দত্তকে। স্ক্রীনটাইম কম হলেও ইম্প্যাক্টফুল ক্যারেক্টার আধীরা, আমার কাছে মনে হয় সঞ্জয় দত্তর জন্য একদম পার্ফেক্ট ক্যারেক্টার, যেমনটা দর্শক দেখতে চায়। পাওয়ারফুল, স্টাইলিশ এন্ড স্ট্রং। মুভির সেরা ভিলেন আধিরা। আমার খুবই ভালো লেগেছে চরিত্র এবং অভিনয়।

রাভিনা ট্যান্ডনঃ মুভির কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রের মধ্যে একটি হলো রামিকা সেন, যিনি ইন্ডিয়ান প্রধানমন্ত্রী। রামিকা সেনের চরিত্রে দেখতে মিলবে বলিউডের জনপ্রিয় অভিনেত্রী রাভিনা ট্যান্ডনকে। স্ক্রীনটাইম কম হলেও ইম্প্যাক্টফুল ক্যারেক্টার রামিকা সেন। আমার কাছে মনে হয় রাভিনা ট্যান্ডনের ক্যারিয়ারের স্ট্রং ক্যারেক্টার। এমন ব্যতিক্রমধর্মী চরিত্রে রাভিনা ট্যান্ডনকে আমার খুবই ভালো লেগেছে। দুর্দান্ত অভিনয় করেছেন রাভিনা ট্যান্ডন।

শ্রীনিধি শেঠিঃ রকির প্রেমিকা ও স্ত্রী রীনা দেশাইয়ের চরিত্রে দেখতে মিলবে জনপ্রিয় অভিনেত্রী শ্রীনিধি শেঠিকে। অভিনয় মোটামুটি ভালো লেগেছে।

অর্চনা জোইসঃ কেজিএফ সিনেমার মধ্য মনি রকি এবং তার মা শান্তম্মা। রকির মা শান্তম্মা চরিত্রে অভিনয় করেছেন অর্চনা জোইস। আমি আগে কখনো অর্চনা জোইসের মুভি দেখি নাই। কিন্তু কেজিএফ এর দুই মুভিতে মেয়েটার অভিনয় যা ছিলো বলার মতো না। ডায়লগ এবং ফেস এক্সপ্রেশন দেখে মুগ্ধ হয়ে গেছি। আমার খুবই ভালো লেগেছে চরিত্র এবং অভিনয়।

এই চরিত্রগুলির বেশী ভূমিকা ছিলো মুভিটিতে। মনে হচ্ছিলো যে যার অবস্থানে একদম পারফেক্ট ছিলো। এছাড়া প্রকাশ রাজ, অচ্যুত কুমার, মালবিকা অবিনাশ, রাও রমেশ, বি.এস. অবিনাশ, ঈশ্বরী রাও, টি.এস. নাগভরানা, শরণ শক্তি, আয়াপ্পা পি. শর্মা, অশোক শর্মা, জন কোক্কেন, গোবিন্দে গৌড়া, বালকৃষ্ণ, লাক্কি লক্ষ্মণ, সিমহাশ, এন রামেশ, রামচন্দ্র রাজু, বিনয় বিদাপ্পাসহ আরও অনেকে ছিলো। তারা যে যার চরিত্রগুলি যথার্থভাবে ফুটিয়ে তুলেছে।

মেকিং

মেকিং এর কথা বলতে গেলে প্রথমেই আমার মনে আসে মুভির বিজিএম এর কথা, সিনেমাতে অস্থির ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক ছিলো। যা রবি বসরুর করেছেন। কথায় আছে, বি জি এম সিনেমার প্রাণ, মুভিটির বিজিএম আমার অনেক পছন্দনীয় ছিল। আর এই মুভির তুফান, সুলতানা গান আমার অনেক পছন্দের ছিলো।

মুভিটির ভিজুয়াল মেকিং এর ব্যাপারে বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় প্রশান্ত নীল এর কথা। আমার দেখা প্রশান্ত নীলের কেজিএফ চ্যাপ্টার ওয়ানই ফাস্ট মুভি। মুভি দুইটি দেখার পর ভবিষতে তার অসংখ্য মুভি দেখার ইচ্ছে আছে। সালার নেক্সট আকর্ষণীয় মুভি। প্রশান্ত নীলের মেকিং এ নিপুণতা এবং ভিন্নতার স্বাদ দেখতে পাইছি। বিশেষ করে গল্প, আর্টিস্ট এবং শুটিং সেট। গল্পের বিষয়ে একটু পড়েই বলি। মুভিটির ক্যামেরা ফ্রেমিং, ইডিটিং, কালার, স্ক্রিন প্লে সব কিছু একদম ফাস্ট ক্লাস ছিলো, খুবই ভালো লেগেছে।

প্লট

এবার সিনেমার অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশ নিয়ে বলি। আমার মনে হয়, সিনেমার গল্পই সিনেমার ভালো খারাপের পেছনে থাকে। একটা ভালো গল্প দিতে পারে জনপ্রিয়তা আবার একটা খারাপ গল্প নিমিষেই ডুবিয়ে দিতে পারে, যত ভালো মেকিং বা কাস্ট থাকুক না কেন। তাই গল্প নির্বাচন অনেক বেশী গুরুত্বপূর্ণ। কেজিএফ মুভির গল্প একদম আলাদা এবং অসাধারণ লেগেছে। রকির চরিত্র অনেক সুন্দর ভাবে গল্পে ফুটিয়ে তুলছে। অনেকগুলি চরিত্র মনে রাখার মতো ছিলো। আর আমার কাছে এটাই প্লাস পয়েন্ট মনে হইছে। গল্পে সব সময় টান টান একটা উত্তেজনা ছিলো। এক কথায় বলতে গেলে, অসাধারণ গল্প ছিলো।

ওভারঅল

সর্বোপরি বলা যায়, অনেকদিন পর অনেক ভালো মানের একটা মুভি দেখতে পেলাম, এই বছরের সেরা মুভি গুলির মধ্যে অন্যতম একটা মুভি এটি। কোথাও এক মূহুর্তের জন্য বিরক্ত লাগে নাই বা বোর করার মতো এক ঘেয়ামো কিছু ছিলো না। গুরুত্বপূর্ণ অনেকগুলি চরিত্র অনেক ভালো লেগেছে। এছাড়া গল্পও অনেক ভালো লেগেছে।

আমি চাই না কোন প্রকার স্পয়লায় দিয়ে আপনাদের মুভিদেখার ইন্টারেস্ট নষ্ট করতে তবে চরিত্র ডিস্ক্রাইব করতে গিয়ে কিছু কিছু লিক করছি। আর করতে চাই না। আপনিও দেখতে পারেন আশা করছি ভালো লাগবে। মুভিটিতে আমি অন্যরকম জেদ, মায়ের প্রতি ভালোবাসার ছাপ দেখতে পাইছি।

আজকের মতো বিদায় নিচ্ছি আবার সময় করে অন্য কোন মুভি নিয়ে লিখবো। আপনাদের রিভিউটি ভালো খারাপ যাই লাগুক কমেন্ট করে জানাবেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *